যদি আর বাঁশি না বাজে / Jodi Banshi Aar Na Baje- Kazi Sabyasachi / কাজী সব্যসাচী
HTML-код
- Опубликовано: 21 окт 2024
- বন্ধুগন,
আপনারা যে সওগাত আজ হাতে তুলে দিলেন তা আমি মাথায় তুলে নিলুম। আমার সকল তনুমন প্রান আজ বীণার মতো বেজে উঠেছে, তাতে শুধু একটি মাত্র সুর ধ্বনিত হয়ে উঠেছে-আমি ধন্য হলুম, আমি ধন্য হলুম। আমায় অভিনন্দিত আপনারা সেইদিনই করেছেন, যেদিন আমার লেখা আপনাদের ভাল লেগেছে। বিংশ শতাব্দীর অসম্ভবের যুগে আমি অন্মগ্রহন করেছি। এরি অভিযান সেনাদলের তুর্য বাদকের আমি একজন,এই হোক আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।
আমি এই দেশে এই সমাজে জন্মেছি বলেই আমি এই দেশেরই এই সমাজেরই নই,আমি সকল মানুষের। কবি চায়না দান,কবি চায় অঞ্জলী কবি চায় প্রীতি। সুন্দরের ধ্যান, তার স্তব গানই আমার ধর্ম।তবু বলছি আমি শুধু সুন্দরের হাতে বীণা পায়ে পদ্মফুলই দেখিনি,তার চোখে চোখ ভারা জলও দেখেছি। শ্বশানের পথে, গোরস্থানের পথে ক্ষুধা দীর্ন মুর্তিতে ব্যথিত পায়ে তাকে চলে যেতে দেখেছি, যুদ্ধভূমিতে তাকে দেখেছি,কারাগারের অন্ধকূপে তাকে দেখেছি,ফাঁসির মঞ্চে তাকে দেখেছি।
আমাকে বিদ্রোহী বলে খামাখা লোকের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন কেউ কেউ। এই নীরিহ জাতটাকে আছড়ে-কামড়ে তেড়ে নিয়ে বেড়াবার ইচ্ছা আমার কোনদিনই নেই। আমি বিদ্রোহ করেছি বিদ্রোহের গান গেয়েছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বিরুদ্ধে। জাতিতে জাতিতে বিদ্বেষ যুদ্ধ বিগ্রহ, মানুষের জীবনের একদিকে কঠোর দারিদ্র-ঋন-অভাব, অন্যদিকে লোভী অসুরের যক্ষের ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা পাষান স্তুপের মত জমা হয়ে আছে। এই অসম ভেদ জ্ঞানকে দূর করতেই আমি এসেছিলাম। আমার কাব্য, সংগীতে কর্মজীবনে অভেদ সুন্দর সাম্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম। আমি যশ চাইনা খ্যাতি চাইনা প্রতিষ্ঠা চাইনা নেতৃত্ব চাইনা। জীবন আমার যত দুঃখময়ই হোক আনন্দের গান,বেদনার গান গেয়ে যাব আমি। দিয়ে যাবো নিজেকে নিঃশেষ করে সকলের মাঝে বিলিয়ে, সকলের বাঁচার মাঝে থাকবো আমি বেঁচে। এই আমার ব্রত এই আমার সাধনা এই আমার তপস্যা।
রবীন্দ্রনাথা আমায় প্রায়ই বলতেন, “দেখ উন্মাদ তোর জীবনে শেলীর মত,কীট্সের মত খুব বড় একটা ট্র্যাজেডি আছে-তুই প্রস্তুত হ”কিন্তু জীবনের সেই ট্র্যাজেডি দেখবার জন্য কতদিন অকারণে অন্যের জীবনকে অশ্রুর বর্ষায় আচ্ছন্ন করে দিয়েছি। কিন্তু আমার জীবন রয়ে গেল বিশুদ্ধ মরুভূমির মত তপ্ত। আমার বেশ মনে পড়ছে একদিনের আমার জীবনের মহা অনুভূতির কথা- আমার ছেলে মারা গেছে, আমার মন যখন তীব্র পুত্রশোকে ভেঙ্গে পড়েছে ঠিক সেই দিনে সেই সময়ে আমার বাড়ীতে হাস্নাহেনা ফুটেছে। আমি প্রানভরে সেই হাস্নাহেনার গন্ধ উপভোগ করেছিলাম। আমার কাব্য আমার গান আমার জীবনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছে। যদি কোনদিন আপনাদের প্রেমের প্রবল টানে আমাকে আমার একাকীত্বের পরম শুন্য হতে অসময়ে নামতে হয় তাহলে সেদিন আমায় মনে করবেন না আমি সেই নজরুল; সেই নজরুল অনেকদিন আগে মৃত্যুর খিড়কি দুয়ার দিয়ে পালিয়ে গেছে। মনে করবেন পূন্যার্থের তৃষা নিয়ে যে একটি অশান্ত তরুন এই ধরায় এসেছিল অপূর্ণতার বেদনায় তারই বিগত আত্না যেন স্বপ্নে আমাদের মাঝে কেঁদে গেল।
যদি আর বাঁশি না বাজে- আমি কবি বলে বলছিনা, আপনাদের ভালবাসা পেয়েছিলাম সেই অধিকারে বলছি-আমায় আপনারা ক্ষমা করবেন আমায় ভুলে যাবেন। বিশ্বাস করুন আমি কবি হতে আসিনি আমি নেতা হতে আসিনি,আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম। সেই প্রেম পেলামনা বলে আমি এই প্রেমহীন নীরব পৃথিবী থেকে নীরব অভিমানে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলাম। যেদিন আমি চলে যাব সেদিন হয়তোবা বড় বড় সভা হবে, কত প্রশংসা কত কবিতা হয়ত বেরুবে আমার নামে,দেশপ্রেমিক-ত্যাগীবীর-বিদ্রোহী বিশেষনের পর বিশেষন, টেবিল ভেঙ্গে ফেলবে থাপ্পর মেরে,বক্তার পর বক্তা এই অসুন্দরের শ্রদ্ধা নিবেদনের শ্রাদ্ধ দিনে-বন্ধু তুমি যেন যেওনা। যদি পার চুপটি করে বসে আমার অলিখিত জীবনের কোন একটি কথা স্মরণ করো, তোমার আঙ্গিনায় বা আশেপাশে যদি একটা ঝরা পায়ে পেষা ফুল পাও সেইটিকে বুকে চেপে বলো, বন্ধু আমি তোমায় পেয়েছি--
“তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু আর আমি জাগিবনা
কোলাহল করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙ্গিবনা
নিশ্চুল-নিশ্চুপ আপনার মনে পুড়িব একাকী
গন্ধ বিধুর ধূপ”।।
অসাধারণ। যেমন কবিতা তেমনি কাজী সাহেবের পুত্র কাজী সব্যসাচীর অসাধারণ গলা
নজরুল লেখনী যে হাতিয়ার। গায়ে কাঁটা দেয় যতবার শুনি। বারে বারে শুনি।
কাজী সব্যসাচী হচ্ছেন কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা-অভিভাষণের সর্বশ্রেষ্ঠ আবৃত্তিকারী। তাঁর ধারেকাছেও কেউ নেই।
প্রেম না পেয়ে নজরুল যদি আর বাঁশি না বাজে চরম সত্যটি লিখেছিলেন।তাঁরই সুযোগ্য পুত্র সব্যসাচি সাবলীলভাবে উপস্থাপনা করে প্রকৃত সত্যের প্রকাশ ঘটালেন
ডেইলি কয়েকবার শুনি, হায়!হৃদয়টা কেমন মোচড় দিয়ে উঠে। এতো আবেগ, এতো সত্য, এতো তিক্ততা আর কেউ কোনোদিন দেয়নি।
সত্যের দ্ব্যর্থহীন প্রকাশ, চমৎকার আবৃত্তি!
কবি আপনি যা লিখেছেন তা অতীব সত্য, সে সত্য আজ ও নিয়মমত চলছে। আমরা যারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তাদের জীবন বড় অসহায়। হায়!
কি কন্ঠস্বর!যেমন পিতা তার সুযোগ্য পুত্র ....
যতবার শুনি মনে হয় ... আমরা কি পেয়েছিলুম আর কি হারিয়েছি ?
বড্ড ভালো একটা লেখা আর তেমনই অনবদ্য পাঠ
অসাধারণ লেখা,বার বার শুনেও যেন মন ভরে না কত বার যে শুনেছি।যখনই কোনও কারণে মন খারাপ হয় তখন ঔষধের কাজ হয়।নজরুল জী তাঁর উপলদ্ধির কথা, দুঃখ ও যন্ত্রণার বাস্তব জীবনের কথা। আর কন্ঠ সেও অসাধারণ!! সব্যসাচীর গলায় ছাড়া মানায় না।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা।
চেতনার কবি কে অন্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা অঞ্জলি
কয়েক হাজার বার শুনা হয়েছে তবুও আরও শুনতে ইচ্ছে করে
ভালো থাকুক ওপরে
জয় জয় শাহ্ সুফি ছৈয়দ কাজী নজরুল (র:)
অসাধারণ আবৃতি
অসাধারণ, কতবার শুনেছি তবুও আরও শতবার শুনতে হয়
জন্ম থেকে শুনছি তাও মন ভরে না
সব্যসাচী অসাধারণ কন্ঠস্বর ।
শ্রদ্ধা
স্যালুট প্রিয় কবি।।
যতই শুনি ততই ভালো লাগে।
দারুন
❤❤❤
ওয়াও
অসাধারণ। বহুবার শুনেছি। ফেসবুকে পোস্ট করার ক্ষেত্রে কি কোনো বাধ্যবাধকতা আছে?
বার বার শুনেও পুরোনো হয় না
❤️🙏❤️
Sakoler priya kazi Nazrul.
অনেক জায়গায়, অনেক কথা বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রচুর বানান ভুল।
ঠিক বলেছেন।
Tulanahin