আজ তারাপীঠে তারা মায়ের শুক্লা চতুর্দশীতে আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে শক্তির আরাধনা

Поделиться
HTML-код
  • Опубликовано: 10 фев 2025
  • আজ তারাপীঠে তারা মায়ের শুক্লা চতুর্দশীতে আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে শক্তির আরাধনা
    ▪️ আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীর দিনে প্রতি বছর তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি পালিত হয় । এই আবির্ভাব তিথিতে তারা মা কে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বাইরে বের করে এনে মন্দির প্রবেশপথ সংলগ্ন “ বিরাম মঞ্চে ” , তাঁর ছোট বোন মলুটির মা মৌলিক্ষার মন্দির অভিমুখে পশ্চিম দিকে মুখ করে বসিয়ে পুজো করা হয় । বীরভূম ঝাড়খন্ড লাগোয়া নানকার মৌজার মলুটি গ্রামের মা মৌলিক্ষা তারা মায়ের ছোট বোন । এই দিন দুই বোনে মুখ দেখাদেখি হয় । এ নিয়েও এক কল্প কাহিনী প্রচলিত । “ নাটোরের খান , আর নানকার এর দিকে চান” । অর্থাৎ মা তারা নাটোরের রাণীর তৈরী মন্দিরে বসে সারা বছর ভোগ গ্রহণ করেন । আর বছরের এই একটি দিন নানকার রাজপাটে অবস্থিত মৌলিক্ষা মন্দিরের দিকে চেয়ে থাকেন ।
    ▪️পাল রাজত্বের সময়ে জয়দত্ত সওদাগর মায়ের আদেশে দ্বারকা নদের ধারে মহাশশ্মানের শ্বেতশিমূল গাছের তলায় পঞ্চমুন্ডির আসনের নিচে মা তারার শিলামূর্তি উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করেন । সেই দিনটা ছিল শুক্লা চতুর্দশী তিথি ।
    তদবধি প্রতি বছর শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে তারাপীঠে মা তারার আবির্ভাব তিথি পালিত হয়ে আসছে ।
    এই দিনে আবালবৃদ্ধবনিতা তারাপীঠের ঐ বিরাম মঞ্চে মা তারাকে শুধু স্পর্শ নয় একেবারে জড়িয়ে ধরে মনোবাঞ্ছা নিবেদন করতে পারে । বিরাম মঞ্চে কোন কবাট দেওয়া দরজা নেই ।চার দিকে খিলানের গাঁথনি । যে কেউ যখন খুশি যতবার ইচ্ছে তারা মাকে ছুঁতে পারে । এ এক আশ্চর্য শিহরণ জাগান অনুভুতি । ।
    ▪️শুক্লাচতুর্দশী তিথিতে অতি ভোরে সেবায়েতরা তারামাকে চান করিয়ে আরতি করে, গর্ভগৃহ থেকে মাকে এনে বারান্দা সংলগ্ন বিরাম মঞ্চে পশ্চিম দিকে মুখ করে স্থাপন করেন । মন্দিরের গর্ভ গৃহে মা তারা সারা বছর উত্তর মুখী হয়ে বিরাজ করেন । এদিন তারা মায়ের গর্ভগৃহ শুন্য থাকে । শুন্য বেদীর নিচে মায়ের রূপোর চরণ দুটি দর্শন করা যায় - যা অন্য সময়ে চোখের আড়ালে থাকে ।
    ▪️মায়ের আবির্ভাব তিথিতে মায়ের কোন অন্ন ভোগ হয় না । মায়ের ছোট বোন মৌলিক্ষারও এই দিন অন্ন ভোগ হয় না । দুপুরে লুচি সুজি ও মিষ্টান্ন ভোগ নিবেদন করা হয় ।
    সারা দিন মা পশ্চিম মুখী হয়ে অগণিত ভক্তকে স্পর্শ দিয়ে ধন্য করেন । মায়ের পশ্চিম মুখী অবস্থান করার সঙ্গে একটি কাহিনী প্রচলিত ।
    ▪️১১০৮ সালে বা ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে মা তারার আবির্ভাব তিথিতে তান্ত্রিকেরা মায়ের পুজোর আয়োজন করছিলেন । সেই সময়েই মলুটির নানকার রাজা রাখরচন্দ্র মায়ের সামনে বসে আরাধনা করছিলেন । তান্ত্রিকেরা রাখরচন্দ্রের পুজো বন্ধ করে দেয় । রাজা তখন ক্ষুন্ন মনে দ্বারকা নদীর পশ্চিমপাড়ে ঘট স্থাপন করে মায়ের পুজো করে নিজের গ্রামে ফিরে যান ।
    ▪️রাতে তান্ত্রিকদের প্রধান আনন্দনাথকে মা স্বপ্নে জানান যে ,তাঁর ভক্ত রাখরচন্দ্র অভিমান করে ফিরে গেছেন । তাই প্রতি বছর আবির্ভাব তিথিতে মাকে যেন পশ্চিম দিকে মুখ করে বসিয়ে পুজার্চনা করা হয় । সেই থেকে এই শুক্লা চতুর্দশীর আবির্ভাব তিথিতে মা তারা সারা দিন পশ্চিম মুখী অবস্থান করেন ।
    ▪️সারা দিনে অগণিত ভক্তকে দর্শন দিয়ে সন্ধ্যেবেলায় মা আপন আলয়ে ফিরে আসেন । এই প্রত্যাবর্তন দেখতে হাজার হাজার মানুষ মন্দির চত্বরে ভিড় করেন ।এ সময়ে বিরাম মঞ্চে কোন মানুষ উঠতে পারে না । সেবায়েতরা একে একে মায়ের বেশ খুলে ঝুড়ির মধ্যে ঢাকা দিয়ে ,লোকচক্ষুর আড়াল করে মন্দিরে নিয়ে আসেন ।
    গর্ভগৃহে মা তারাকে পুনঃস্থাপন করে আবার চান করিয়ে আরতি করা হয় । রাতে মায়ের ভোগ হয় খিচুড়ি ,পোলাও , পাঁচ রকম ভাজা , মাছ ও মাংস নিবেদন করা হয়।

Комментарии • 8