Binsar KMVN | Offbeat Uttarakhand | Binsar - living in a forest resort | Binsar wildlife sanctuary

Поделиться
HTML-код
  • Опубликовано: 4 ноя 2024
  • বিনসরে পৌঁছাতে প্রায় ৪ টে বেজে গেছিলো। রুমে না গিয়ে এক দৌড়ে চলে গেছিলাম ভিউ পয়েন্টে। আহা কি অপূর্ব সেই দৃশ্য। নিচে মেঘেদের লুকোচুরি, পাহাড়ের আড়াল থেকে সূর্য দেবের আলোর ঝলকানি আর সুবিশাল পাহাড়, সব মিলিয়ে এক অসাধারণ দৃশ্য। এরপর দেখলাম বাগানের অসাধারণ সব ফুলের বাহার। রুমে যেতে মন চাইছিলো না, তাই এখানে বসেই কিছু সময় কাটালাম এবং এখানে বসেই কফি খেলাম আমরা। এরপর শুরু হলো হাওয়া। সেকি ভীষণ হাওয়ার আওয়াজ সাথে ধীরে ধীরে মেঘ এসে ঘিরে ফেললো। বেশ কনকনে ঠান্ডা অনুভব করায় চলে এলাম রুমে। রুমের বিশাল বিশাল কাঁচের জানালার সামনে বসে দেখলাম ঝুপ করে সন্ধ্যে নামা। এখানে সন্ধ্যের পরে বেরোনোর কোনো উপায় নেই। তাই চুপ করে আলো নিভিয়ে বসেছিলাম জানালার ধারে। ঘোর অমাবস্যা, অন্ধকার ঘর, ঘন জঙ্গল সব মিলিয়ে এক গা ছমছমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো।
    বিনসর KMVN জঙ্গলের মধ্যে একটা রিসোর্ট। এতো টাই ঘন জঙ্গল এখানে, যে এখনও ইলেকট্রিসিটি নেই এখানে। সন্ধ্যে ৬-৮.৩০ পর্যন্ত জেনারেটার চলে। তাতে ঘরে একটা ছোট্ট আলো এবং ফোন চার্জ দেবার সুযোগ রয়েছে। বাকি সময় ইলেকট্রিক আলো পাওয়া যাবে না। এরপর ঘরে জ্বলবে মোমবাতি। ঘরে চারটে মোমবাতি এবং বাথরুমে একটা মোমবাতি ও দেশলাই দেওয়া রয়েছে। সকালে ঘর প্রতি দু বালতি গরম জল দেওয়া হয়। এখানে রুম বুক করার সময়েই ব্রেকফাস্ট এবং ডিনার বাফেট বুক হয়। লাঞ্চ এবং সন্ধ্যের টিফিনের জন্যে কিছু নির্দিষ্ট মেনু রয়েছে। এখানে আমিষ বলতে ডিম টাই পাওয়া যায়। মাংস কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ এই রিসোর্ট এবং গোটা জঙ্গল এলাকায়। রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে ৮ টায়। খাবার খাওয়া হলেই আলো বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু ঘন জঙ্গল তাই কিছু অচেনা পোকাও কিন্তু চোখে পরবে। সবরকম সুবিধাযুক্ত রিসোর্ট কিন্তু নয় এটা। এখানে এসে থাকতে গেলে এটুকু এডজাস্ট করে নিয়েই থাকতে হবে, তবে যে এডভেঞ্চার হবে তা সারাজীবন মনে রাখার মতো।
    এতো ঘন জঙ্গলের মধ্যে যেখানে খাবার জল টাও কিনে আনতে হয় সেখানে এতো রাজকীয় খাবার দেখে আমরা চমকে গেছিলাম। সন্ধ্যে বেলা আমরা কফি আর পিঁয়াজ পকোড়া নিয়েছিলাম। রাতের মেনুতে ছিলো - টমেটো সুপ্, সাদা ভাত, রুটি, স্যালাড, ডাল, পাঁচমিশালী সব্জি, শাহী পনীর, ডিমের কারী, সিমুইয়ের পায়েস , পাঁপড়। ওনারা অনেক পরিমাণে এনে দিচ্ছিলেন। ডিম সবার জন্যে দুটো করে ছিলো। ব্রেকফাস্টে ছিলো আলুর পরোটা, আচার, রায়তা, সস, চিঁড়ের পোলাও, ব্রেড, বাটার, জ্যাম, ওমলেট, চা, কফি। তবে সবার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আপনারা এখানে এলে কেউ খাবার নষ্ট করবেন না। আমরা দুটো করে ডিম বা একস্ট্রা তরকারি সবটাই তুলে দিয়েছিলাম। টাকা দিয়ে খাচ্ছি বলে সব নিয়ে নষ্ট করিনি। এখানে অনেক কষ্ট করে খাবার নিয়ে আসতে হয়।
    সব মিলিয়ে বেশ দারুণ একটা এডভেঞ্চার হলো এখানে এবং পুরো ট্রিপের মধ্যে বেস্ট স্টে এটাই ছিলো।
    বিনসরে দ্বিতীয় দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম চারিদিক মেঘে ঢাকা। পঞ্চচুল্লি দেখার যেটুকু আশা ছিলো সেটাও শেষ। যাই হোক ঘরে গরম জল দিয়ে যেতে আমি রেডি হতে লাগলাম। শুভদীপ গেলো ভিউ পয়েন্টে। আমিও রেডি হয়ে ভিউ পয়েন্টে যাবো বলে জুতো পরছি সাথে সাথে শুভদীপের ফোন। তাড়াতাড়ি আয়, পঞ্চচুল্লি দেখা যাচ্ছে। আমি একদমই বিশ্বাস করিনি। কি দেখতে কি দেখে ডাকাডাকি করছে। হেলেদুলে ভিউ পয়েন্টে গিয়ে আমার চক্ষু চড়কগাছ। সত্যিই পঞ্চচুল্লি দেখা যাচ্ছে কিন্তু মেঘে ঢেকে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমি দেখে হতভম্ব হয়ে গেছি। মাকে ফোন করে বললাম তাড়াতাড়ি এসো। বলতে বলতে মেঘে ঢেকে গেলো। ছবি তোলার কথা মাথাতেও নেই। মেঘে ঢাকার শেষ মুহূর্তে ছবি তুলেছি, হয়তো জুম করলে বোঝা যাবে। মা, বাবা, ভাই এসে আর কিছুই দেখতে পেলো না।
    যাইহোক চলে গেলাম হলে ব্রেকফাস্ট- এর জন্যে। ব্রেকফাস্ট মেনুতে ছিলো আলুর পরোটা, রায়তা, আচার, চিঁড়ের পোলাও, ওমলেট, ব্রেড বাটার জ্যাম, চা এবং কফি। ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পরলাম। বেশ সকাল সকাল বেরিয়েছিলাম তাই আমাদের চোখ ছিলো জঙ্গলের দিকে। বেশ কয়েক ধরণের হরিণ, বুনো পাখি এবং ময়ূর দেখতে পেলাম। বিনসর শিব মন্দিরে এসে গাড়ি থামলো এরপর। এই জায়গাটা অসাধারণ। কি শান্ত, হালকা জলের কুলুকুলু শব্দ, পাখির ডাক। ভীষণ ভীষণ সুন্দর একটা পরিবেশ। এখানে কিছু সময় কাটিয়ে বেরিয়ে পরলাম মুক্তেশ্বরের উদ্দেশ্যে।

Комментарии • 14