‘সপ্ত ঋষির এক ঋষি’-স্বামী বিবেকানন্দ, পর্ব: তিন : বক্তা: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।

Поделиться
HTML-код
  • Опубликовано: 10 фев 2025
  • ‘সপ্ত ঋষির এক ঋষি’-স্বামী বিবেকানন্দ, পর্ব: তিন : বক্তা: সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।#Sanjib Chatterjee#
    আমেরিকার সাব জিরো টেম্পারেচারে ক্ষেত্রীর মহারাজা অজিত সিংহের দেওয়া সিল্কের পোশাকে শীত আটকাবে কীভাবে।স্বামী বিবেকানন্দের তখন প্রয়োজন দামি শীত বস্ত্র ও জুতোর। সেই রাতে তিনি একটি সরাইখানায় রাত কাটালেন। সেখানে তিনি ভাবছেন, আমি কী মূর্খ! মাদ্রাজের ছেলেরা আমাকে নাচিয়ে দিল, ঠাকুর যেতে বললেন, মা অনুমতি দিলেন আর আমিও হনুমানের মতো লাফ দিয়ে এখানে চলে এলাম! একবারও ভাবলাম না আমার অবস্থার কথা! সেইসময় তিনি দেখছেন, তার পাশে বসে আছেন স্বয়ং ঠাকুর। তিনি বলছেন, তুই কী ভাবছিস আমি তোর সঙ্গে নেই?
    এর আগেও ঠাকুর তাঁকে বহুবার এইভাবে দর্শন দিয়েছেন। স্বামীজি তখন পওহারী বাবাজির কাছে দীক্ষা নেবেন বলে মনস্থ করেছেন। পরদিন স্বামীজি দীক্ষা নেবেন পওহারী বাবাজির কাছে। শুধুমাত্র রাতটা কাটার অপেক্ষা। সেই রাতে তিনি ঘরে শুয়ে সেইসব কথাই ভাবছিলেন। এমনসময় তাঁর ঘরটি দিব্য জ্যোতিতে আলোকিত হয়ে উঠল, আর স্বামীজি দেখলেন, তাঁর চিরপ্রেমিক আধুনিক গুরু শ্রীরামকৃষ্ণ স্বয়ং সশরীরে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। ঠাকুরের মুখে কোনও কথা নেই। সস্নেহ অথচ বেদনাভরা তাঁর ছলছল দুটি আঁখি প্রিয় শিষ্যের চোখের ওপরই নিবদ্ধ।
    স্বামীজি কী করলেন। তখন তাঁর মুখে কোনও ভাষা নেই। সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। শুরু হল কম্পন। স্বামীজি কাঁপছেন। ভয়ে নয়, আত্মগ্লানিতে। স্বামীজি সেদিন শুধু কাঁদেননি, তাঁর মনে আত্মগ্লানি জেগেছিল। তিনি দীক্ষা নেবেন না বলে ঠিক করলেন। দীক্ষার দিন স্থগিত থাকল। তবু স্বামীজির মনের দ্বন্দ দূর হলনা। দিন দুয়েক বাদে স্বামীজির মন আবার বাবাজির কাছে দীক্ষা নেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠল। এবারও দর্শন দিলেন শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ। তবে সেই রাতে এমন কিছু ঘটেছিল যা স্বামীজি কখনও কারও কাছে প্রকাশ করেননি। এইরকম পাঁচ-ছয়বার দর্শন পাওয়ার পর স্বামীজির মন থেকে দীক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা চিরতরে হারিয়ে গেল। তাঁর হৃদয়ে ঠাকুর ছাড়া কারও প্রবেশের অবকাশ আর থাকল না।
    স্বামীজি আবার ঠাকুরকে দেখলেন। অদ্ভুত, অলৌকিক সে ঘটনা। বিশ্বজয়ে বেরবেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেই যাত্রার ফল ও প্রয়োজন সম্পর্কে তাঁর মনে তখন কোনও দ্বিধা ছিলনা। কিন্তু অনিশ্চয়তা বোধটা কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তিনি ঈশ্বরনির্দেশের অপেক্ষায় রইলেন।
    তারপর কী ঘটল? স্বামীজি অর্ধনিদ্রিত অবস্থায় শুয়ে আছেন। এমন সময়ে স্বপ্নে তিনি সেই নির্দেশ পেলেন। দেখলেন, বিস্তৃত মহাসাগরের একূল থেকে তাঁর গুরু, পিতা শ্রীরামকৃষ্ণ সমুদ্রে নামলেন, তারপর হাঁটতে হাঁটতে চললেন ওপারের দিকে। এবং ইঙ্গিঁতে অনুসরণ করতে বললেন পুত্র নরেন্দ্রনাথকে।
    তন্দ্রা ভেঙে গেল স্বামীজির। অনাবিল শান্তিতে তাঁর মন ভরে উঠল। তাঁর কানে বাজতে লাগল এক অশরীরী বাণী-‘যাও’।
    সেই অলৌকিক দর্শনকে স্বামীজি ভগবানের নির্দেশ বলেই মেনে নিলেন।
    সাল ১৮৯৫, বিশ্ববিজয়ী স্বামী বিবেকানন্দ সুন্দর একটা চিঠি লিখেছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দজীকে। সেখানে তিনি লিখছেন,‘দাদা, না হয় রামকৃষ্ণ পরমহংস একটা মিছে বস্তুই ছিল, না হয় তাঁর আশ্রিত হওয়া একটা ভুল কর্মই হয়েছে, কিন্তু এখন উপায় কী? একটা জন্ম না হয় বাজেই গেল; মরদের বাত কি ফেরে? দশ স্বামী কি হয়? তোমরা যে যার দলে যাও, আমার কোন আপত্তি নাই, বিন্দুমাত্রও নাই, তবে এ দুনিয়া ঘুরে দেখেছি যে, তাঁর ঘর ছাড়া সকল ঘরেই ‘ভাবের ঘরে চুরি’। তাঁর জনের উপর আমার একান্ত ভালোবাসা, একান্ত বিশ্বাস। কি করিব? একঘেয়ে বলো বলবে, কিন্তু ঐটি আমার আসল কথা।যে তাঁকে আত্মসমর্পণ করেছে, তার পায়ে কাঁটা বিঁধলে আমার হাড়ে লাগে, অন্য সকলকে আমি ভালোবাসি। আমার মতো অসাম্প্রদায়িক জগতে বিরল, কিন্তু ঐটুকু আমার গোঁড়ামি মাফ করবে। তাঁর দোহাই ছাড়া কার দোহাই দেবো? আসছে জন্মে না হয় বড় গুরু দেখা যাবে, এ জন্ম এ শরীর সেই মূর্খ বামুন কিনে নিয়েছে।’
    Apurba Chatterjee, apuch1964@gmail.com , apurba.chatterjee.313?mibextid=ZbWKwL,@apurba1964।
    ★Subscribe to us: sanjibani sudha,

Комментарии • 30