রাজশাহী জেলার নামকরনের ইতিহাস । ৬৪ জেলার নামকরনের ইতিহাস পরব-২৭ । রাজশাহী । রাজশাহীর নামকরন ।
HTML-код
- Опубликовано: 6 фев 2025
- রাজশাহী নামটির উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলেই, কয়েক শতাব্দী পূর্বে ফিরে যেতে হয়। এ শহরের প্রাচীন নামটি ছিল মহাকাল গড়। পরে রূপান্তরিত হয়ে দাঁড়ায় রামপুর-বোয়ালিয়ায়। রামপুর-বোয়ালিয়া শহরের নামকরণ রাজশাহী কী করে হলো, তা নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। এবং এর নেই কোন সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাও । ব্রিটিশ আমলের প্রাথমিক যুগের ইতিহাসেও, রাজশাহী নামক কোনো জনপদ বা স্থানের উল্লেখ নাই।
অনেকে মনে করেন ,এই জনপদ একদা বহু রাজা, সুলতান আর জমিদার শাসিত ছিল বলে নামকরণ হয়েছে রাজশাহী।
ঐতিহাসিক ব্লকম্যানের (Bolch Mann) মতে, খ্রিষ্টীয় ১৫শ শতকে রাজা গণেশের দখলের সময় থেকে, রাজশাহী নামের উদ্ভব হয়েছে। কিন্তু ব্লকম্যানের অভিমত গ্রহণে আপত্তি করে বেভারিজ (Beveridge) বলেন, রাজা গণেশের সময় এই নামটির উদ্ভব হয়ে থাকলে, তার উল্লেখ টোডরমল প্রণীত খাজনা আদায়ের তালিকায় অথবা আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরী নামক গ্রন্থে, অবশ্যই পাওয়া যেত।
ডব্লিউ হান্টারের মতে, নাটোরের রাজা রামজীবনের জমিদারী রাজশাহী নামে পরিচিত ছিল, এবং সেই নামই ইংরেজরা গ্রহণ করে এই জেলার নাম দেন রাজশাহী। অনেকে এসব ব্যাখ্যাকে যথার্থ ইতিহাস মনে করেন না।
তবে ঐতিহাসিক সত্য যে, নবাব মুশির্দকুলী খান এই অঞ্চলকে চারুলা রাজশাহী নামে, একটি বৃহৎ বিস্তৃতি চাকলা নির্ধারণ করেন। প্রথমে সমগ্র চাকলার রাজস্ব আদায় করতেন, হিন্দু রাজ-জমিদার উদয় নারায়ণ। তিনি ছিলেন মুর্শিদ কুলি খাঁনের একান্ত প্রীতিভাজন ব্যক্তি। যে জন্য নবাব তাকে রাজা উপাধী প্রদান করেন।
অনেকের মতে, প্রথম রাজা উদয় নারায়ণের ওপর প্রীতিবশত, এই চাকলার নাম স্থায়ীভাবে রাজশাহী করেন, নবাব মুর্শিদকুলী খান। ১৭১৪ সালে নবাব মুর্শিদকুলী খান, নাটোরের রামজীবনের নিকট বন্দোবস্ত প্রদানকালে, সেই বন্দোবস্তে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
কিন্তু ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়ের মতে, ১৭৩০ সালে রামজীবন মারা গেলে, তার দত্তক পুত্র রামকান্ত রাজা হন। ১৭৫১ সালে রামকান্তের মৃত্যুর পরে, তার স্ত্রী ভবানী দেবী রাণী ভবানী নামে উত্তরাধীকারী লাভ করেন। এই জমিদারি পরে নাটোরের রাণী ভবানীর শাসনে আসে, এবং বহু অঞ্চল নিয়ে বিস্তৃতি লাভ করে। পরে রাণী ভবানীর দেয়া নামই রাজশাহীর নামকরণ করা হয়। অবশ্য রাণী ভবানী সম্পর্কে গ্রান্ট লিখেছিলেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারিকেই রাজশাহী নামে ডাকা হতো। সেখান থেকেই রাজশাহী জেলার নামকরণ হয়।
তবে সাধারণভাবে রাজশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে, দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক, দুটি শব্দের সংযোজন পরিলক্ষিত হয়। তা হল সংস্কৃত ভাষা ও ফারসি ভাষা। সংস্কৃত শব্দ ‘রাজ’ ও ফারসি শব্দ ‘শাহী’ শব্দযোগে, ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব। দুইটি শব্দের অর্থই রাজা বা রাজকীয়, অথবা বাদশাহ বা বাদশাহী। যেমনিভাবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ, দু-বার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন- শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ধার-দেনা, ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, পাহাড়-পর্বত, পাকা-পোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনি করে এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও হয়ে থাকতে পারে বলে, অনেকে মনে করেণ।।
রাজশাহী শহরকে কেন্দ্র করে ১৭৭২ সালে জেলা গঠন করা হয়। পরে ১৮৭৬ সালে গঠিত হয় রাজশাহী পৌরসভা। এবং পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে রাজশাহী, সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়।
অনেক সুন্দর উপস্থাপন
অনেক সুন্দর।
Very fine.